অনেকেই কম মূলধন নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান, কিন্তু বুঝে উঠতে পারেন না এত কম মূলধনে কি কি ব্যবসা শুরু করা যায়। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে মাত্র অনেক ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আজকের এই নিবন্ধে আমি আপনাদের ১০০০০ টাকায় কি কি ধরনের ব্যবসা শুরু করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।
আমরা অনেকেই স্বাধীন ব্যাবসা শুরু করতে চাই, অনেকেই আবার চাকরির সঙ্গে সঙ্গে ছোট খাটো ব্যবসা শুরু করতে চায়। কিন্তু টাকার অভাবে আমরা ব্যবসা শুরু করতে পারি না। আজ আমি আপনাদের কেবলমাত্র ১০০০০ টাকায় কত রকমের ব্যবসা করা যায় তা আপনাদের বলব। আপনি চাইলে এর মধ্য থেকে যেকোনো একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে কম টাকায় অনেক ভাল ব্যাবসা শুরু করা যায়। পরে পরে এই ব্যবসা কে আপনি অনেক বড় করতে পারেন, এবং অনেক টাকা ইনকাম করতে পারেন। তবে সব সময় যে ব্যবসা আপনার এলাকাতে ভাল চলবে এদের মধ্যে সেই ব্যবসা আপনি শুরু করবেন।
১। আইসক্রিম পার্লার –
আজকের দিনে আমারা একটা জিনিস লক্ষ করি আবহাওয়া যাই হোক না কেন, শীত বা গ্রীষ্ম আমাদের মধ্য প্রচুর মানুষ আইসক্রিম খায়, অর্থাৎ আমি ব্লতে চাইছি সারা বছরই আইসক্রিম প্রেমীদের অভাব নেই। তার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দেখি আজকাল যেকোনো অনুষ্ঠান যেমন বিয়েবাড়ি , জন্মদিন বা অন্য কোনো উৎসবে আইসক্রিমের প্রচলন খুব বেশি করে রয়েছে। তাই এই সমস্ত কারনে আমার মনে হয় আইসক্রিম পার্লার-এর ব্যবসা করে ভালো লাভ করা জেতে পারে। তবে এর জন্য আপনাকে FSSAI থেকে একটি লাইসেন্স করিয়ে নিতে হবে। তাহলে আপনার আইসক্রিম পার্লার –এর গুনগত মান অনেক উন্নত হবে।
২। মোবাইল রিচার্জের দোকান
আপনি গ্রামে বা শহরে যেখানেই থাকুন না কেন, খুব কম টাকার ভিতর মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা আপনার জন্য একটা ভাল বিকল্প হতে পারে। তবে এই ব্যবসার জন্য আপনাকে একটা দোকানের ব্যবস্থা করতে হবে। আপনি একটা বিষয় খেয়াল করবেন যে এখনও প্রচুর মানুষ আছেন যারা অনলাইনের ব্যবহার না করে দোকানে গিয়ে মোবাইল রিচার্জ করেন। আপনি এখানে রিচার্জ করে টাকা আয় করতে পারবেন। তার সঙ্গে সঙ্গে আপনি এই মানুষের অনেক সাহায্য করতে পারবেন।
তবে এই মোবাইলের রিচার্জ এর সঙ্গে সঙ্গে আপনি ধিরে ধিরে ডিটিএচ টিভি রিচার্জ, বিদ্যুৎ বিল জমা, গ্যাস সিলিন্ডার বুকিং ও রেলের টিকিট বুকিং, পরীক্ষার ফরম পূরণ, বিভিন্ন পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড এছাড়া আরও অনেক রকেমের কাজ করে বা মানুষদের সুবিধা দিয়ে ভালো আয় করা যায়।
৩। টিফিন পরিষেবা
আমারা দেখি যে আমাদের চারপাশে অনেকই নিজেদের বাড়ি ঘর ছেড়ে কর্মসূত্রে দূর দুরান্তে থাকতে হয়। এবং এর জন্য তাদের খাওয়া নিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তারা প্রাথমিক ভাবে হোটেলে খেতে বাধ্য হয়। এমতাবস্থায় প্রতিদিন বাইরের খাবার খাওয়ার চেয়ে তারা টিফিন সার্ভিস থেকে খাবার অনেকটা বেশি পছেন্দ করে। যাতে তারা বাড়িতে বসে খাওয়া পেয়ে যায় টিফিন পরিষেবা যদি আপনি দিতে পারেন। তবে এটি একটি খুব উপকারী বিকল্প হতে পারে।
৩। বিবাহ অনুস্থানের আয়োজনের দায়িত্ব
বিবাহ অনুস্থানের আয়োজনের দায়িত্ব নিয়ে তা পরিচালনা করা একটা খুব ভাল ব্যবসা হতে পারে। এই ব্যবসার জব্য আপনাকে পরিশ্রমী হওয়ার পাশাপাশি পরিচালনা করার খমতা ও আপনাকে সৃজনশীল হতে হবে। এই সমস্ত গুনগুলি থাকলে আপনি এই কাজে খুবই ভাল ব্যবসা করতে পারবেন। এই ব্যবসায় আপনাকে মুলত দুটি কাজ করতে হবে, প্রথমটি হল মানুষের বিয়ের সম্পূর্ণ পরিকল্পনা করা। এবং এক্ষেত্রে আপনাকে সৃজনশীল হতে হবে এবং দ্বিতীয়ত সমস্ত ফাংশন কে পরিচালনা করতে হবে। এবং সব সময় আপনাকে চেষ্টা করতে হবে যাতে আপনার অনুষ্ঠানটি নিখুঁত হয়।
এখনকার দিনে এই ধরনের ব্যবসার প্রচুর রমরমা হয়েছে। কেননা এখন অনেকেই তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানকে নিখুঁত ভাবে করতে চায় । আর এর জন্য তারা যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে প্রস্তুত।
৪। রান্নার ক্লাস
আপনি যদি রান্নার কাজে ভীষণ পটু হন , অর্থাৎ আপনি বিভিন্ন ধরণের সুস্বাদু খাবার রান্না করতে পারেন। তবে আপনি এই বিকল্পটি কে পেশা হিসাবে নিতে পারেন। এবং এই পেশা আপনাকে ভাল আয় করতেও সাহায্য করবে। এন এর জন্য আপনি রান্নার ক্লাস শুরু করতে পারেন। যারা নতুন রান্না শিখতে ইচ্ছুক সে সমস্ত মহিলাদের বা পুরুষদের আপনি রান্না করা এবং বিভিন্ন ধরণের রেসিপি তৈরি করতে শেখাতে পারেন। এছাড়া আপনি অনলাইনএ বিবন্ন অ্যাপের মাধ্যমে রান্নার ক্লাস শুরু করতে পারেন। এবং ইউটিউব চ্যানেলে মানুষকে রান্না শেখাতে পারেন।
৫। ফিটনেস প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ
আপনি যদি শরীর চর্চা কে খুব ভাল বাসেন এবং শরীর চর্চা এর বিষয়ে অনেক কিছু জানেন । তবে আপনার জন্য এই পেশা খুবই একটা ভাল পেশা হতে পারে। এখানে আপনি আপনার নিজের শরীর কে ফিট রাখার সঙ্গে সঙ্গে অন্যদেরকে ও অনুপ্রাণিত করতে পারেন। এবং এই ব্যবসা আপনি অফলাইন বা অনলাইন মাধ্যমে ঘরে বসে থেকে অন্যদের ফিটনেস প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করতে পারেন। আপনি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি মানুষদেরকে ফিটনেস-এর প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে আপনি যত মানুষদের সঙ্গে জুড়বেন ততই আপনার প্রসার বাড়তে থাকবে।
৬। Tourist গাইড
Tourist গাইড –এর ব্যবসা খুব একাটা সম্মান জনক ব্যবসা। এই ব্যবসা করতে হলে আপনাকে বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে হবে অথবা শিখতে হবে। এবং এটা করতে পারলে আপনি একজন খুব ভাল Tourist গাইড হতে পারবেন। এই ব্যবসায় বিদেশ থেকে বা আমাদের দেশের ও বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকদের বিভিন্ন পর্যটন স্থান সম্পর্কে বলতে পারবেন। এর জন্য কিন্তু আপনাকে – বিভিন্ন পর্যটন স্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে নিতে হবে। এবং এই সমস্ত তথ্য পর্যটকদের জানাতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি যেকোনো আপনার বাড়ির পাশের যেকোন পর্যটন স্থান থেকে শুরু করতে পারেন।
৭। সাইকেল সারানোর দোকান
যদিও সাইকেল সারানোর ব্যবসা ধীরে ধীরে কমছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রচুর সাইকেল মানুষ ব্যবহার করে। এবং এই ব্যবসা আবার খুব বেশি করে চলবে বলে আশা করা হচ্ছে। আপনি যদি সাইকেল মেরামতির জেনে নিলে আপনি খুব সহজেই এই ব্যাবসা টা করতে পারবেন । এই ব্যবসা করতে ১০০০০ টাকার ও কম লাগবে।
৮। চা ও কফি স্টল
এই ব্যবসা করার জন্য আপনাকে একটা ছোট দোকান ঘরের জোগাড় করতে হবে। এবং একটা দোকান ঘরের জোগাড় করতে পারলে আপনি খুব কম টাকায় এই ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন। এই ব্যবসার মূল কথা হল – আপনাকে আপনার গ্রাহকদের খুশি করতে হবে। আপনি একটু খেয়াল করে দেখবেন যে একই জায়গায় অনেক চা, কফি-এর দোকান আছে। কিন্তু কিছু কিছু দোকানে প্রচুর ভিড় হতে থাকে। তাই আপনাকে গ্রাহকদের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে।
৯। বাইক মেরামতের দোকান
বাইক মেরামতের দোকান ও আপনি খুব সহজেই অনেক কম খরচে করতে পারেন। এবং এই ব্যবসা এক্ষন ভারত, বাংলাদেশ সমস্ত দেশে প্রচুর প্রসার লাভ করছে। আপনাকে কেবল বাইক মেরামতের কাজটা শিখে নিতে হবে। ১০০০০ টাকায় এই ব্যাবসা খুব সহজেই শুরু করা জেতে পারে।
গ্রামে থেকে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া
১০। মশলা তৈরি করার ব্যবসা।
এখনকার দিনে গোটা মশলার থেকে গুঁড়ো মশলার ব্যবহার ভীষণ হারে বেড়ে গেছে। প্রায় সমস্ত বাড়িতে গুড়ো মশলার ব্যবহার হয়। আপনি চাইলে এই সুযোগ নিয়ে গুঁড়ো মশলার ব্যবসা করতে পারেন। বাজার থেকে গোটা মশলা কিনে এনে তাকে পেশাই করে এবং পরিষ্কার করে প্যাকেট জাত করে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসা আপনি আপনার বাড়ি থেকে শুরু করতে পারেন। এবং শুরুতে এর মূলধন খুবই সামান্য লাগে। একটা Mixar Grinder হলেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
Conclusion – আশাকরি আমার এই নিবন্ধ আপনাদের কিছুটা কাজে লাগবে। আপনি আমার এই লেখা বা এই ওয়েবসাইটের অন্য লেখা এর সম্পর্কে কোন রকমের মন্তব্য থাকলে নিচে কমেট বক্সে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। যদি নতুন কোন বিষয়ে জানতে চান তা ও জানাবেন।