আজহার আলী আজাহার আলী আজাহার আলি পাকিস্থানি ক্রিকেটার এর জীবন কথা আজহার আলি রেকর্ড
আজহার আলী, পাকিস্থানি ক্রিকেটার এর জীবন কথা (Azhar Ali, the life of a Pakistani cricketer in Bengali)
“আজহার আলী” আজকের এই নিবন্ধে আমি পাকিস্থানের বিখ্যাত ক্রিকেটার আজহার আলী –এর সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। আপনি যদি পাকিস্থানের এই বিখ্যাত ক্রিকেটার সম্পর্কে জানতে চান তবে আপনি এই নিবন্ধ শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আমি এই নিবন্ধে পাকিস্থানের ক্রিকেটার আজহার আলী-এর জীবনের নানা ঘটনা আজকের এই নিবন্ধে আপনাদেরকে বলব।
আজহার আলী- এর জন্ম (Azhar Ali Birth Day in bengali)
আজহার আলী ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৫ সালে পাকিস্থানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহরে জন্ম গ্রহণ করেন।
আজহার আলী- এর পিতার নাম (Azhar Ali’s father’s name in Bengali)
এই বিখ্যাত ক্রিকেটার এর পিতার নাম মহম্মদ রফিক।
আজহার আলী- এর স্ত্রীর নাম (Name of Azhar Ali’s wife in Bengali)
আজহার আলীর স্ত্রীর নাম – নাইলা আজাহার।
আজহার আলী- এর সন্তান ( Kids of Azhar Ali in Bengali)
আজহার আলী ২জন পুত্র সন্তানের পিতা।
আজহার আলী- এর ক্রিকেট কেরিয়ার (Azhar Ali’s cricket career in Bengali)
পাকিস্থানের বিখ্যাত ক্রিকেটার আজহার আলীর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ২০১০ সালের ১৩ই জুন অস্ট্রেলিয়ার বিরুধে টেস্ট ক্রিকেটে, লর্ডসের মাটিতে। তিনি পাকিস্থান দলে ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহতি লেগ ব্রেক বোলার হিসাবে বিখ্যাত। আজহার আলী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুধে ২০১৬ সালে দিন রাতের টেস্ট ম্যাচে তিনি সেঞ্চুরি , ডবল সেঞ্চুরি ও ত্রিপল সেঞ্চুরি ৩০২ রান করেছিলেন। সেটা ছিল তখনকার দিনের রেকর্ড। পরে ডেভিড অয়ারনার ভেঙে ছিলেন ২০১৯ সালে। ঘরোয়া বা ডোমেস্টিক ক্রিকেটে তিনি লাহোর-এর খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ, লাহোর ঈগলস, লাহোর লায়ন্স, লাহোর কালান্দার্স দলের হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছেন। এছাড়া পাকিস্তান এ দল এবং এবং স্কটল্যান্ড –এর হান্টলি দলের হয়ে খেলেছেন। পাকিস্তানের সুপার লিগে তিনি লাহোর কালান্দার্সের অধিনায়ক হিসাবে প্রথম মরসুমে খেলেছেন।
একদিনের ম্যাচে তার অভিষেক ঘটে ২০১১ সালের ৩০শে মে আয়ারল্যান্ডের বিরুধে বেলফাস্তের মাঠে।
২০০৪ সালে তিনি স্কটল্যান্ডে চলে যান। এবং তিনি হান্টলি ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন।
এবং এই ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সময় তিনি নিজেকে ব্যাটসম্যান হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ২০০৪-২০০৭ পর্যন্ত টানা ৪ বছর স্কটল্যান্ডে ক্রিকেট খেলেন।
এরপর তিনি পাকিস্তানে ফিরে আসেন এবং খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজের দলের হয়ে নিয়মিত খেলতে থাকেন। এবং ২০০৭-২০০৮ মরসুমে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৫০এর ও বেশী। ২০০৮-২০০৯ মরসুমে কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে খুব ভাল পারফরমেন্স করেন। এবং এই কারনে তিনি অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য পাকিস্তান এ ক্রিকেট দলে সুযোগ পান। এবং পরের বছর তিনি জাতীয় দলে সুযোগ পান।
২০১৬ সালে পাকিস্থান সুপার লিগে আজহার আলী লাহোর কালান্দার্সের অধিনায়ক নির্বাচিত হন।এবং এই টুর্নামেন্টে তিনি ৭ ম্যাচে ১৮০ রান করেন।
২০১৮ সালে আজহার আলী কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ যোগ দেন এবং সমারসেটের হয়ে মরসুমের শেষ সাতটি ম্যাচে খুব ভাল পারফরমেন্স করেন। ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে সমারসেটের হয়ে প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেন।
২০১৯-২০২০ মরসুমে “কায়েদ-ই-আজম ট্রফি” টুর্নামেন্টের জন্য সেন্ট্রাল পাঞ্জাব স্কোয়াডর হয়ে খেলেন।
২০২০-২১ সালে মরসুমে সেন্ট্রাল পাঞ্জাবের দলে ছিলেন।
২০২২ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ওরচেস্টারশায়ার দলে সই করেন।
আইপিএল ২০২২ কোন গ্রুপে কোন দল খেলবে জেনে নিন
আজহার আলীর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার (Azhar Ali’s international career in Bengali)
২০১০ সালে পাকিস্তান দল থেকে তারকা প্লেয়ার ইউনুস খান এবং মোহাম্মদ ইউসুফকে বাদ দেওয়া হয় এবং আজহার আলীকে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলে নেওয়া হয়। অভিষেক ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ১৭ রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে, তিনি 42 রান করেন এবং পাকিস্তান ম্যাচটি ১৫০ রানে হেরে যায়।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে তিনি প্রথম ইনিংসে ৩০ রান করেন, এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন কারণ পাকিস্থান পনের বছরের পরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাদের প্রথম টেস্ট জেতে ।
২০১০ নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের জন্য টেস্ট দলে আজহার আলী জায়গা পান। এবং প্রথম টেস্টের উভয় ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরি করেন এবং এই টেস্টে পাকিস্তানকে হার বাঁচাতে বড় ভুমিকা নেন। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনি সর্বোচ্চ ৯০ রান করেন, দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের সঙ্গে ম্যাচ বাঁচান।
এর পর নির্বাচকরা আজাহার আলিকে ২০১১ সালে জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য সুযোগ দেওয়া হয়। প্রথম ম্যাচে আজাহার আলির পারফরম্যান্স খুব একটা ভাল ছিল না। প্রথম ইনিংসে আলী মাত্র ১৮ রান করতে পেরেছিলেন এবং পরবর্তী ইনিংসে তাকে ব্যাট করতে হয়নি কারণ পাকিস্তান ১০ উইকেটে জয়লাভ করেন। তবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই আজাহার আলি তার ৬তম হাফ সেঞ্চুরি করেন।
২০১২ সালে শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য ওয়ানডে এবং টেস্ট উভয় দলেই আজাহার আলিকে বাছাই করা হয়। তিনি দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ৯৬ এবং ৪র্থ একদিনের ম্যাচে ৮১ রানের দুদান্ত ইনিংস খেলেন।। এবং টেস্টে সিরিজে ২ টি সেঞ্চুরি করেন। এবং এই বছর প্রথমবারের মতো আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের প্রথম ১০-এ উঠে আসেরন।
২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আজহার আলি এর জন্য একটা স্মরণীয় টুর্নামেন্ট হয়ে থাকবে। এই টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজহার আলি এবং জামানের ১১৮ রানের জুটি পাকিস্তানের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এরপর ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে এই জুটি চিত্তাকর্ষক ১২৮ রান করেন। পাকিস্তান এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ১৮০ রানে জেতে, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি টুর্নামেন্ট যেকোনো দলের জন্য সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
2021 সালের দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হোম টেস্ট সিরিজে, প্রত্যাশা মত পাকিস্তানের 17 সদস্যের দলে তাকে রাখা হয়। এবং প্রথম টেস্টেই তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন।
আজাহার আলি পাকিস্থানের অধিনায়কত্ব (Azahar Ali is the captain of Pakistan in Bengali)
মিসবাহ-উল-হক ওডিআই থেকে অবসর নেওয়ার পর, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড-এর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নতুন অধিনায়ক হিসাবে কাকে মনোনীত করবেন।এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড মিসবাহের উত্তরসূরি হিসাবে আজাহার আলি কে নিয়োগ করেন। এবং একটা কথা জানবেন একদিনের ম্যাচের অধিনায়ক হয়ার আগে আজাহার আলি প্রায় ২ বছর ধরে কোন ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেননি , তাই এটা একটা পিসিবি কাছে কঠিন সিন্ধান্ত ছিল। আজাহার আলি পাকিস্তান দলকে সবসময় শীর্ষে নিয়ে সবসময় চেষ্টা করেছেন ।
আজাহার আলি অধিনায়ক হিসাবে বাংলাদেশ সিরিজ
তবে অধিনায়ক হিসাবে তার প্রথম সিরিজ বাংলাদেশের বিরুধে ভীষণ খারাপ ফল হয়। বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তান হোয়াইটওয়াশ হয়ে যায়। তিনটি একদিনের ম্যাচে পাকিস্তান হেরে যায়। যদিও আজাহার আলী প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরি, তার পর ৬২ এবং ১০১ এর ভাল রান করলেও দল খুব হতাস জনক ফল করে। এটি ছিল পাকিস্তানের প্রথম সিরিজ হার বাংলাদেশের কাছে।
আজাহার আলি অধিনায়ক হিসাবে জিম্বাবুয়ের সিরিজ
অধিনায়ক হিসাবে ২য় সিরিজ ছিল জিম্বাবুয়ের বিরুধে, এবং এই সিরিজে পাকিস্থান ২-০ একদিনের সিরিজ জিতে নেয়।
আজাহার আলি অধিনায়ক হিসাবে শ্রিলঙ্কা সিরিজ
এরপর শ্রিলঙ্কা সিরিজে ও পাকিস্থান ভাল ফল করে। শ্রীলঙ্কায় নয় বছর পর পাকিস্থান সিরিজ জিতে নেয়। আজাহার আলী এই সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করেন, এবং কেবলমাত্র ২১ ইনিংসে ১০০০ রান করে দ্রুততম পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান হিসাবে এই রান করেন।
আজাহার আলি অধিনায়ক হিসাবে ইংল্যান্ড সিরিজ
২০১৬ সালের ইংল্যান্ড সিরিজ পাকিস্তানের জন্য খুব একটা ভাল ছিল না। পাকিস্তান টেস্টে ২-২ তে টেস্ট সিরিজ শেষ করে। আজাহার আলীর পারফর্মেন্স খুব ভাল ছিল টেস্টে ১৩৯ রান ছিল তার। টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের জন্য ওয়ানডে সিরিজটি ছিল অত্যন্ত খারাপ এবং ইংল্যান্ডে পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ছিল। পাকিস্থান ৪-১ এ হেরে যায়। এর মধ্যে একটি তে ১৬৯ রানের পরাজয় ছিল যেখানে ইংল্যান্ড এক ইনিংসে ৪৪৪ রানের বিশ্ব রেকর্ড স্কোর করেছিল।কিন্তু এখানেও আজাহার আলী ৮০ এবং ৮২ এর দুটি স্কোর সহ আলি ৫ ইনিংসে ২০৮ রান করেছিলেন।
আজাহার আলি অধিনায়ক হিসাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ
ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ – অধিনায়ক হিসাবে আজাহার আলীর ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ একটা খুব গুরুত্ব পূর্ণ সিরিজ হিসাবে ধরা হতে পারে। এই সিরিজে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজও জিতে নেয় পাকিস্তান। পাকিস্তান প্রথম ম্যাচে ১১১ রানে জয়লাভ করে যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ৪র্থ সর্বোচ্চ বড় ব্যবধানের জয়। আজাহার আলী সিরিজের ৩য় ম্যাচেই তার ৩ নং একদিনের সেঞ্চুরি করে নেন এবং প্রথম পাকিস্তানি অধিনায়ক হিসেবে ৩টি সেঞ্চুরি করেন। এছাড়াও পাকিস্তান টেস্ট ম্যাচ সিরিজ ও ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয়, এবং আজহার আলী প্রথম টেস্ট ম্যাচে ৩০০ রান করেন।
অস্ট্রেলিয়া সফর ২০১৬
এই অস্ট্রেলিয়া সফর আজাহার আলীর খুব একটা ভাল ছিল না। তিন ওয়ানডেতে তিনি মাত্র ৩৭ রান করেন। এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-১ সিরিজে হেরে যান। তবে টেস্ট সিরিজে তিনি ভালো রান করেন। তিনি মেলবোর্নে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করেন, এটা অস্ট্রেলিয়াতে পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর হিসেবে রেকর্ড করা হয়। এই সিরিজের পর আজাহার আলি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তে ওডিআই অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ইংল্যান্ড সিরিজ
২০২০ সালের জুনে, আজাহার আলি কে ইংল্যান্ডে পাকিস্তান সফরের জন্য 29 সদস্যের একটি স্কোয়াডের টেস্ট অধিনায়ক হিসাবে রাখা হয়। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে, তিনি টেস্ট ক্রিকেটে তার 6,000তম রান করেন।
এক নজরে আজাহার আলির ক্রিকেট কেরিয়ার –
Competition | Test Match | One Day Int. |
Matches | 91 | 53 |
Runs scored | 6,721 | 1,845 |
Batting average | 42.53 | 36.9 |
100s | 18 | 3 |
50s | 34 | 12 |
Top score | 302* | 102 |
Balls bowled | 855 | 258 |
Wickets | 8 | 4 |
Bowling average | 76.37 | 65 |
আজহার আলী- এর স্ত্রীর নাম কি ?
আজহার আলীর স্ত্রীর নাম – নাইলা আজাহার।
আজহার আলীর সন্তান কত জন ?
আজহার আলীর ২ জন্য পুত্র সন্তান
Q. আজহার আলীর Highest স্কোর বা সবচেয়ে বেশি রান ?
Ans. আজহার আলীর সবচেয়ে বেশি ৩০২ রান করেন ।
Q. পাকিস্থানের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রন সংস্থার নাম কি ?
Ans. – পাকিস্থানের ক্রিকেট বোর্ড বা PCB , এর সভাপতি রমিজ রাজা।