আমরা অনেকেই নিজের ব্যবসা শুরু করতে চাই, কিন্ত সঠিক Business Idea – এর অভাবে আমারা সঠিক ব্যবসা শুরু করতে পারি না। আনেক সময় আমরা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে ভয় পাই। কিন্তু আমাদের আশেপাশে অনেক সফল মানুষ আছেন যারা অনেক কম টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করেছেন এবং আজ প্রচুর টাকা ইনকাম করে সফল হয়েছেন। আজ আপনাদের কে এরকম একজনের কথা জানাব ।
প্রবাদ আছে ‘পরিশ্রম’ সাফল্যের চাবিকাঠি। পরিশ্রম, স্থির লক্ষ্য আর নিষ্ঠা থাকলে ভাগ্যের চাবিকাঠি এমনভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব যা দুনিয়ার কাছে অলৌকিক বলে মনে হবে। এমনই এক মানুষের কথা বলব আজকের প্রতিবেদনে যার সফর শুরু হয়েছিলো জুতো সারাই করা দিয়ে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো সেই ব্যক্তিই আজ বছরে ৫ কোটি টাকার ব্যবসা করছে।
আজ আমরা মুম্বাইয়ের বাসিন্দা সন্দীপ গজকাসের সাথে পরিচয় করাবো। এই ব্যক্তি প্রমাণ করেছেন যে, কোন কাজই ছোট বা বড় নয়। আর এই ভাবনা নিয়েই দেশের প্রথম জুতা লন্ড্রি শুরু করেন সন্দীপ গজকাস। জেনে অবাক হবেন যে সন্দীপ নিজে একজন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পরও স্বেচ্ছায় জুতো পরিষ্কার এবং মেরামতের কাজ বেছে নেয়। কারণ তার মনে হয়েছিলো এই ব্যবসায় প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সন্দীপ গজকাস একটি ধনী পরিবারের ছেলে। তারা সারা দিন কাটত ল্যাপটপ বা ব্ল্যাকবেরি ফেনে এবং তিনি সারা দিন খুঁজে বেড়াতেন ব্যবসার কথা। তার ব্যবসা হল ভাল ক্যাটাগরির পুরানো বা খারাপ জুতো কে নতুন করে দেওয়া। তার পিতামাতা যখন এই ব্যবসার কথা শোনে তখন রীতিমত বিরোধীতা করেন। তাছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর এরকম একটা কাজ করলে লোকে কী বলবে সেই ভাবনাও কুরে কুরে খাচ্ছিলো তাদের। যদিও সন্দীপ এসব কিছুকে পাত্তা দেয়নি। বরং সে তার স্টার্টআপের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।
একটি সাক্ষাৎকারে সন্দীপ জানিয়েছিলেন যে, তিনি যখন পরিবারের সমর্থন পেলেন না তখন ১২,০০০ টাকা সঞ্চয় করে নিজের লন্ড্রি শুরু করেন। নিজের বাড়ির ঘরকে ওয়ার্কশপ বানিয়ে মুম্বাইয়ের আন্ধেরি এলাকায় দ্য শু লন্ড্রি চালু করেন। মাত্র ১৬ জন কারিগর নিয়ে শুরু হওয়া লন্ড্রি আজ শু ভাইভাল নামে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পরিণত হয়েছে। শুরুর দিকে দৈনিক ৮০ থেকে ৯০ জোড়া জুতো মেরামতের কাজ করতো তার কোম্পানি, পরে সন্দীপ এই কম্পানি কে অনেক বড় করেন।
ব্যাবসা বাড়ানোর জন্য সন্দীপ তার বন্ধুদের নোংরা, পুরানো জুতো তাদের কাছ থেকে নিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার এবং মেরামত করার পর একদম নতুনের মতো করে ফিরিয়ে দেয়। এই সময় দারুণ সাড়া পেয়েছিলেন বন্ধুদের থেকে। বন্ধুদের উৎসাহ যেমন তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিলো তেমনি প্রচুর কাস্টমার পেতেও সাহায্য করেছিলো।
আপনাদের মনে হতে পারে আমার এই কথাগুলি কি সঠিক, আপনি যদি আপনার ফোন বা ল্যাপটপ থেকে গুগল – এ একটু সার্চ করেন, তবে সন্দীপ গজকাসের এর সম্বন্ধে অনেক লেখা পেয়ে যাবেন । এছাড়া economictimes নিউজ পেপারে ১২ ডিসেম্বর সন্দীপ গজকাসের উপর অনেক বড় লেখা পাবলিস্ট হয়েছিল ।
বর্তমানে দ্য শু লন্ড্রি ব্যবসার ফ্র্যাঞ্চাইজি গোরখপুর, পুনে, ব্যাঙ্গালর, কইম্বেতুর , ইন্দোর শহরে খোলা হয়েছে। সন্দীপ তার কোম্পানির ফ্র্যাঞ্চাইজি এক স্থান থেকে আরেক স্থানে দ্রুত সম্প্রসারণ করছে। এই কোম্পানি থেকে যেমন তার রোজগার বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনই বহু বেকার ছেলের কর্মসংস্থানও তৈরি করেছে। জানিয়ে রাখি দ্য শু লন্ড্রির মোট ব্যবসা পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এখন তিনি বেশ কিছু দেশে এটাকে বিস্তার করছেন ।
উপসংহার – আপনাদের যদি এই লেখা থেকে কিছুমাত্র লাভ হয় তবে তবে কমেন্ট করবেন। আমরা আরও নতুন নতুন সাফ্যলের গল্প আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
এইরকম আরও নানান নিত্যনতুন ব্যবসা-বাণিজ্য মূলক আইডিয়া পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং ডানদিকের উপরের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে।