আমাদের ভেতর প্রায় অধিকাংশ মানুষই মনে করেন যে লাখ লাখ তাকা ছাড়া ব্যবসা হয় না। এবং তার ফলে প্রচুর টাকা না থাকলে আমরা ব্যবসাতে বিনিয়োগ করতে ভয় পাই। কিন্তু আজ আমরা আপনাকে এমন এক মহিলার সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি যিনি 3000 টাকাকে 130 কোটিতে রূপান্তর করেছিলেন। চলুন জেনে নিই তাদের গল্প।
নীলম মোহনের গল্প শুধু কেবল নারীদেরই উৎসাহ দেয় না, যারা অনেক কিছু করতে চায় কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে তা করতে পারছে না। তাদের কে অনেকটা উৎসাহিত করবে ।
নীলম মোহনের কাছ থেকে শেখা উচিত যে, মাত্র 3000 টাকা বিনিয়োগ করেও কোন ব্যবসা শুরু করেও তাকে কোটি কোটি টাকায় রূপান্তরিত করা যায়, যেমন তিনি করেছেন 130 কোটির কোম্পানিতে । এই যাত্রাটাও তার জন্য ভীষণ কঠিন ছিল । এমনকি তার কোম্পানি এক পর্যায়ে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল, কিন্তু তিনি কখনো হাল ছেড়ে দেননি।
“দ্য উইকেন্ড লিডারের” (ম্যাগজিন) এর প্রতিবেদন অনুসারে, নীলম মোহন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার বিএ পড়ার সময় তিনি আইআইটি-এমবিএ পেশাদার অমিত মোহনের সাথে বিয়ে করেন 21 বছর বয়সে, যখন তিনি বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন, বিয়ের পরে তাকে তার স্বামীর সাথে দিল্লিতে আসতে হয়েছিল।
নীলমের ভেতরে সবসময় কিছু একটা করার তাগিদ ছিল। এই ইচ্ছার তাগিদে তিনি 22 বছর বয়সে 1977 সালে ফ্যাশন নামে একটি কোম্পানি শুরু করেন। কিন্তু 1978 সালে, তার প্রথম সন্তানের গর্ভাবস্থায়, তাকে দীর্ঘ দিন ছুটি নিতে হয়। এবং তাকে তার ব্যবসা বন্ধ করতে হয়।
এর পরে, তিনি পুরুষদের পোশাক ডিজাইনের জন্য দিল্লিতে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং ইউপি এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি মাসে মাত্র তিন হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। এই চাকরির সময় তিনি আবার নিজের কাজ শুরু করার চিন্তা করেন।
এই চিন্তাকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য তিনি তার বন্ধু হরমিন্দর সালধির সাথে কাজ শুরু করেন। তিনি তার বন্ধু হরমিন্দর এবং সুশীল কুমারের সাথে 1983 সালে অপেরা হাউস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি শুরু করেন। কোম্পানিটি প্রথম বছরেই সবাইকে চমকে দিতে শুরু করে এবং প্রথম বছরেই কোম্পানির টার্নওভার 15 লাখ টাকায় পৌঁছে যায়। এরপর তার কোম্পানি বাড়তে থাকে।
কিন্তু 1991 সালে, নীলম তার পারিবারিক সমস্যার মধ্যে জড়িয়ে পড়েন , এবং তার স্বামীর সাথে ব্যক্তিগত কারণে আলাদা হয়ে যান। এর সাথে নতুন সমস্যা হলো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের সাথে তারও মতপার্থক্য শুরু হয় এবং তাকেও কোম্পানি ছাড়তে হয়। এসব এত সমস্যার মধ্যে পড়েও নীলম সাহস হারায়নি। 1993 সালে তিনি 4 জন টেলারিং মিস্ত্রি কে নিয়ে নিয়ে নিজের কোম্পানি শুরু করেন।
এর নাম রাখেন মঙ্গোলিয়া ব্লসম। তিনি এই কোম্পানির জন্য তিনি তার জমানো টাকা দিয়ে একটি ছোট বাড়ি কেনেন , এবং এই বাড়িকেই কারখানায় রূপান্তরিত করেন, তিনি তাঁর কর্মচারীদের খাওয়া-দাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা করেন। এবং তার কম্পানি ভাল চলতে থাকে। কিন্তু কথায় বলে চিরদিন কাহার ও সমান নাহি যায়। এক্ষেত্রে 2002 সালে যখন তার কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে তখন আবারও সমস্যা দেখা দেয়। তার বন্ধু তাকে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছিল। এরপর তার কোম্পানি কে নিয়ে আর ভাবতে হয় নি। তাঁর ছেলে সিদ্ধার্থ, যিনি পড়াশোনা করে আমেরিকা থেকে ফিরেছিলেন, তিনিও তাঁর মাকে সাহায্য করেছিলেন। এখন নীলম মোহনের কোম্পানির নেট মূল্য 130 কোটি টাকা।
এই ছিল নীলম মোহনের success হয়ার কাহিনি, যদি আপনার এই গল্প ভাল লেগে থাকে তবে facebook এ অবশ্যই লাইক দেবেন ও অন্যকে শেয়ার করবেন।
উপসংহার –
ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত এইরকম আরও নানান খবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং উপরের ডানদিকের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে । যদি আপনার নিজস্ব কোন মতামত থাকে তবে আপনি নিচে কমেন্ট করবেন।
এইরকম আরও নানান নিত্যনতুন ব্যবসা-বাণিজ্য মূলক আইডিয়া পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং ডানদিকের উপরের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে।