আমরা অনেকেই নিজের ব্যবসা শুরু করতে চাই, কিন্ত সঠিক Business Idea – এর অভাবে আমারা সঠিক ব্যবসা শুরু করতে পারি না। এছাড়া ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে আমরা অনেকেই ভয় পাই। এর একটা বড় কারণ যদি কোন কারণে লোকসানের মুখে পড়তে হয়। আপনাদের এই সমস্যা সমাধান করার জন্য আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে অনেক ব্যবসার ধারনা আপনাদের সামনে তুলে ধরি। আজকের আর একটি নতুন ব্যবসার কথা বলব।
আজকের দিনে বহু ছেলেমেয়ে সাধারণ চাকরি-বাকরি এর পেছনে না ছুটে নিজের দক্ষতা কে সম্বল করে নানা রকমের কাজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । এবং চারিদিকে বিভিন্নরকম নিত্যনতুন ব্যবসা দেখা যাচ্ছে। তবে তাড়াহুড়ো করে কোনোরকম ব্যবসা শুরু করা উচিত নয়। কোনো বিষয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে সেক্ষেত্রে বিজনেস স্কোপ, ব্যবসার সুযোগ, বিনিয়োগ, লাভ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আগেভাগেই জেনে নিয়ে তা নিজের উপযুক্ত মনে হলে তবেই সেই ব্যবসা শুরু করুন। আজকেও আপনাদের সাথে এমন একটি বিষয়ে ব্যবসা ও ক্যারিয়ারের সম্মন্ধে আলোচনা করবো, যা বহু মানুষই করার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু একবার ভালোভাবে এই ব্যবসা শুরু করতে পারলে লাভই লাভ। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক এই ব্যবসাটি সম্পর্কে ।
আজকের বিজনেস আইডিয়াটি হলো ফটোগ্রাফি সম্পর্কে। অনেক মানুষ নিজের শখ হিসেবে ফটোগ্রাফি করে থাকেন। তবে এই ফটোগ্রাফি কে জারা ব্যবসা হিসাবে বেছে নিয়েছেন তারা প্রচুর টাকা আয় করে থাকেন । তবে ভালো কোনো ফটোগ্রাফির ব্যবসা করতে চাইলে আগে থেকেই প্রস্তুত হওয়া দরকার। মনে রাখবেন যদি আপনি শুধুমাত্র ব্যবসা করার জন্য ইচ্ছুক হওয়ায় ফটোগ্রাফার হতে চান তাহলে বেশিদিন এই কাজ করতে পারবেন না। আপনার মধ্যে যদি ফটোগ্রাফির প্যাশন থাকেন, ক্যামেরা কোয়ালিটি, লেন্স ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভালো জ্ঞান থাকে তাহলে ফটোগ্রাফির বিজনেস শুরু করলে মোটা টাকা কামাতে পারবেন।
কত রকমের ফটোগ্রাফি হয় –
- ওয়েডিং ফটোগ্রাফি (বিয়েবাড়ি, অন্যান্য অনুষ্ঠানে গিয়ে ফটোগ্রাফি করা)
- ফ্যাশন ফটোগ্রাফি (ফ্যাশন, মডেলিং, শুটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফি)
- এনভাইরনমেন্ট ফটোগ্রাফি (পরিবেশ বিষয়ক ছবি তোলা)
- ফুড ফটোগ্রাফি (সুন্দর সুস্বাদু খাবারের ছবি তোলা)
- ট্রাভেল ফটোগ্রাফি (ভ্রমণমূলক ও পর্যটন কেন্দ্রিক ফটোগ্রাফি )
- ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি (বন্যপ্রাণী ও অরণ্য সংক্রান্ত ফটোগ্রাফি)
- স্পোর্টস ফটোগ্রাফি (খেলা সম্পর্কিত যেমন, খেলার স্থান, খেলোয়াড়দের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছবি তোলা ইত্যাদি)
- এরিয়াল ফটোগ্রাফি (শুন্যে আকাশের ছবি তোলা বিষয়ক কাজ )
- সায়েন্স ফটোগ্রাফি (বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন কাজের ছবি তোলা যেমন, কোনোরকম যন্ত্র, পরীক্ষা বা মেডিক্যাল সায়েন্স সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ছবি তোলা ইত্যাদি)
- ফটো জার্নালিস্ট (ফটো বিষয়ে সাংবাদিকতা)
এছাড়াও আরও অনেক ক্ষেত্রে ছবি তোলার কাজ রয়েছে। সত্যি বলতে গেলে ফটোগ্রাফির কোনো সীমা নেই, এটি একটি আর্ট। এর প্রতি অনুরাগী ও আগ্রহী হলে অনেক দূর পর্যন্ত আপনি যেতে পারবেন।
ভাল ফটোগ্রাফার কী করে হবেন ?
ফটোগ্রাফার হতে গেলে তেমন কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার দরকার নেই। তবে এক্ষেত্রে আপনার পছন্দের ওপর নির্ভর করে তা বলা যায়। যদি আপনি একজন ইভেন্ট ফটোগ্রাফার হতে চান, মানে বিবাহ, কর্পোরেট মিটিং, পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কাজ করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে কোনোরকম শিক্ষাগত যোগ্যতার দরকার নেই। আপনি ফটোগ্রাফির প্রতি প্যাশনেট হলেই তা করতে পারেন।
অন্যদিকে একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হতে চাইলে আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফিকেট বা ডিপ্লোমা কোর্স করে নিতে পারেন। তাহলে কর্মক্ষেত্রে আপনি নিজের সার্টিফিকেট দেখাতে পারলে তা নিঃসন্দেহে আপনাকে অগ্রাধিকার দিবে
কি ভাবে এই ব্যবসা শুরু করবেন এবং কতো টাকা ইনকাম করতে পারবেন?
আপনি যদি শুরু থেকে ইভেন্ট ফটোগ্রাফার হতে চান তাহলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের তোলা ভালো ভালো ছবিগুলো জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করবেন। তাহলে বহু মানুষ আপনার কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আপনাকে কাজ দিবে। ক্যরিয়ারের প্রথমদিকের কাজগুলো সবথেকে ভালোভাবে করার চেষ্টা করবেন, তাহলে ধীরে ধীরে আপনার পরিচিতি বাড়বে এবং আপনি একজন ভালো ফটোগ্রাফারে পরিণত হবেন। একজন ওয়েডিং ফটোগ্রাফার একটি অনুষ্ঠানে ১০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা অবধি ইনকাম করতে পারেন।
অন্যকোনো ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফি করতে চাইলে ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত সার্টিফিকেট কোর্সগুলো করে রাখলে ভালো। প্রতিবছরই বহু ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফার নিয়োগ করা হয়, যেমন, মিডিয়া চ্যানেল, ফ্যাশন কোম্পানি, বিজ্ঞানক্ষেত্রে ইত্যাদি। আপনি সেইসব জায়গায় আবেদন করে নিজের বেস্ট ফটোগ্রাফিগুলো দেখাতে পারেন। সেখানে একবার সিলেক্ট হয়ে গেলে নূন্যতম কমবেশি ২০,০০০ হাজার স্যালারি দিয়ে আপনার ক্যারিয়ার শুরু হবে। আপনার কাজ ভালো হলে ধীরে ধীরে আপনার স্যালারিও বাড়তে থাকবে।
যদি আপনি চান তাহলে এই চাকরির প্রতি আবদ্ধ না থেকে নিজের স্টুডিও খুলতে পারেন। স্টুডিও ব্যবসা থেকেও প্রচুর টাকা কামানো যায়। পরে ব্যবসা যদি আরও বড়ো হয়ে যায় তাহলে নিজের অধীনে একটি ফটোগ্রাফার টীম বানিয়েও প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন। একজন ফটোগ্রাফার বছরে গড়ে গড়ে কমবেশি প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ থেকে চার লক্ষ টাকা অবধি ইনকাম করতে পারেন।
ফটোগ্রাফির ব্যবসা শুরু করতে চাইলে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
ফটোগ্রাফার হতে গেলে প্রথমেই দরকার একটি ভালো কোয়ালিটির ক্যামেরা। একটি উন্নত ক্যামেরা আপনি অনলাইনে ৫০,০০০ থেকে ১ লক্ষের মধ্যে পেয়ে যাবেন। প্রথমে এই ক্যামেরা দিয়েই ছবি তুলবেন। পরে আপনার ব্যবসা বড়ো হলে আরও উন্নত কোয়ালিটির ক্যামেরা কিনতে পারেন। এছাড়া নিজের স্টুডিও বানাতে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা অবধি খরচ পড়তে পারে। মনে রাখবেন, ফটোগ্রাফির ব্যবসায় বিনিয়োগের পরিমান বেশি হলে লাভের পরিমানও বেশি থাকবে। কারণ বেশি দামী ক্যামেরায় তোলা ছবির গুণগত মান সাধারণ ক্যামেরায় তোলা ছবির চেয়ে ভালো হবে। তবে ভালো ক্যামেরা থাকলেই যে ভালো ছবি তোলা যায় এমন নয়। এরজন্য আপনার নিজের দক্ষতা, সৃজণশীল চিন্তাভাবনা, অভিজ্ঞতা ও প্যাশনের যথেষ্ট প্রভাব থাকে। তাই ফটোগ্রাফির শখ থাকলে এই ব্যবসা ট্রাই করে দেখতে পারেন।
উপসংহার –
ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত এইরকম আরও নানান খবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং উপরের ডানদিকের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে । যদি আপনার নিজস্ব কোন মতামত থাকে তবে আপনি নিচে কমেন্ট করবেন।
এইরকম আরও নানান নিত্যনতুন ব্যবসা-বাণিজ্য মূলক আইডিয়া পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং ডানদিকের উপরের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে।