এই 11 মহিলার শুরু করেছিলেন ছোট্ট ডেয়ারি ব্যবসার সংস্থা, এখন চালাচ্ছেন 230 কোটি টাকার ব্যবসা- জানুন বিস্তারিত

You are currently viewing এই 11 মহিলার শুরু করেছিলেন ছোট্ট ডেয়ারি ব্যবসার সংস্থা,  এখন চালাচ্ছেন 230 কোটি টাকার ব্যবসা-  জানুন বিস্তারিত

যেকোনো মানুষ যদি তার কাজের প্রতি সত্যিকারের নিষ্ঠাবান হন ও কঠোর পরিশ্রম করেন, তাহলে এমন কোন কাজ নেই যেখানে সাফল্য অর্জিত হয় না। আজকে 11 জন মহিলার দুগ্ধ ব্যবসার কথা জানাব, তারা শুরু করেছিলেন সামান্য পুঁজি নিয়ে এখন 230 কোটি টাকার ব্যবসা।

দু’বেলা খাওয়ার ও শিশুদের ভালো জীবনের আশায় গ্রাম থেকে প্রচুর মহিলা ও পুরুষ শহরে চলে যান, এটাই বুন্দেলখণ্ডের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে দেখা জায়। অনেক মহিলাই মোমবাতি, সোলার লাইট, ধূপকাঠি, মিড-ডে মিল রান্নার মতো কাজে দিনরাত পরিশ্রম করেও মাসে এক থেকে দেড় হাজার টাকার বেশি আয় করা খুবই মুস্কিল হয়ে যায় ।

আজ সেই সমস্ত মহিলারা দক্ষতার সাথে কোটি টাকার বার্ষিক টার্নওভার এর কোম্পানি চালাচ্ছেন। এরা নারীর ক্ষমতায়নের একটি শক্তিশালী উদাহরণ , এবং এদের কোম্পানির নাম হল বুন্দেলখণ্ডের বালিনি মিল্ক প্রোডিউসার কোম্পানি৷ 11 জন মহিলা নিয়ে দুগ্ধ ব্যবসা শুরু করা এই সংস্থার প্রায় তিন বছরের মধ্যে 41 হাজার মহিলা সদস্য এই সংস্থার সঙ্গে জুড়ে যায়। সংস্থাটি এক বছরে 230 কোটি টাকার ব্যবসা করছে এবং এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব মহিলাদের হাতে রয়েছে।

বালিনী মানে দুর্গা মানে শক্তি।মা দুর্গার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে কোম্পানিটির নামকরণ করেছিলেন এই মহিলারা। কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত নারীরা আজ তাদের পরিবারের সামাজিক, অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাদের ব্যবসা উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং অন্যান্য রাজ্যে বিস্তৃত হয়েছে। কোম্পানির ডিরেক্টর উমা কান্তিপাল জানান, বুন্দেলখণ্ডের বেশিরভাগ গ্রামেই মহিলারা ছোটখাটো কাজ করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য আয় করার চেষ্টা করেন, কিন্তু এতে তারা খুব কম পারিশ্রমিক পান।অথচ দিনে দিনে সংসার খরচ বেড়েই চলেছে।

পরিবারের খরচ মেটানোই প্রতি সংসারের সব চেয়ে বড় সমস্যা। বালিনী মিল্ক প্রডিউসার কোম্পানি নারীদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের আয়ের উৎস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চালু করা হয়েছিল। গ্রামীণ জীবিকা মিশনও সাহায্য করেছে। এই কাজের জন্য মহিলাদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ নিতে বাইরে যেতে হয়েছিল। শুরুর সময় গ্রামের বাকি মহিলারা এই সংস্থার সঙ্গে জুড়তে সাহস পাচ্ছিলেন না।

কিন্তু দুগ্ধ ব্যবসা থেকে নারীদের আয় যখন মাসে হাজার পাঁচেক হতে শুরু করে, তখন আশেপাশের নারীদের মধ্যেও কোম্পানিতে যোগদানের ইচ্ছা জাগে। নারীরাও গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে সচেতন করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা বাড়তে থাকে। আজ রাজকুমারী, অঞ্জনী, আরাধনা সহ ৭০৩টি গ্রামে ৪১ হাজার মহিলা বালিনীর সদস্য। কোম্পানির প্রতিটি গ্রামে একটি দুধ সংগ্রহ কেন্দ্র তৈরি করেছে । এখানে সংগৃহীত দুধ শীতলকরণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

১১টি গ্রামে একটি চিলিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকে পণ্য বিক্রির জন্য বাজারে পাঠানো হয়। দুধের পাশাপাশি ঘি জাতীয় পণ্যও উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রুপের সদস্যরা বলছেন, নারীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, গ্রামে গ্রামে গিয়ে দুধ কেনা, দুধের গুণাগুণ পরীক্ষা করাসহ সব কাজই নারীদের হাতে। বিক্রয়ের টাকা প্রতি মাসের 13 থেকে 23 তারিখের মধ্যে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছায়৷

সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন

উমা কান্তিপাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই ব্যবসার জন্য তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে ভালো লাগে। জীবনের কষ্ট কমে গেছে। দলটির বেশির ভাগ মহিলার আগে একটি বা দুটি গরু ছিল, এখন সংখ্যাটি পাঁচ থেকে দশটি হয়েছে। উপার্জনের ফলে পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটানো সহজ হয়েছে। শিশুরা ভালো শিক্ষা পাচ্ছে।

এই ভাবে আমাদের দেশে যত বেশী পরিমাণ মহিলা বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য এগিয়ে আসবে, ততই সমাজ পরিপুষ্ট হবে। বালিনি সংস্থা কে আমাদের সেলাম।

যদি আপনার এই খবর ভাল লেগে থাকে তবে facebook এ অবশ্যই লাইক দেবেন ও অন্যকে শেয়ার করবেন।

উপসংহার –

ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত এইরকম আরও নানান খবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং উপরের ডানদিকের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে । যদি আপনার নিজস্ব কোন মতামত থাকে তবে আপনি নিচে কমেন্ট করবেন।

এইরকম আরও নানান নিত্যনতুন ব্যবসা-বাণিজ্য মূলক আইডিয়া পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং ডানদিকের উপরের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে

শেয়ার করুন -

Leave a Reply