গত ৪০বছর ধরে দুর্গা মূর্তি তৈরি করে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়ছেন বহরমপুরের সফিউল আলম খান

You are currently viewing গত ৪০বছর ধরে দুর্গা মূর্তি তৈরি করে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়ছেন বহরমপুরের সফিউল আলম খান

মাটির মূর্তি গড়তে বড্ড ভালোবাসেন সফিউল আলম খান। ছেলেবেলায় খেলার ছলে শুরু করেন কাজ। ছবি আঁকার সূত্র ধরে কাঁচা হাতে বিভিন্ন মডেল তৈরি শুরু করেন। কিন্তু কিছুতেই যেন মন ভরছিল না তাঁর। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন শুরু করেন দুর্গামূর্তি গড়ার কাজ। তারপর থেকে গত প্রায় ৪০ বছর ধরে শরৎ আসার আগে থেকেই সব কাজ সরিয়ে রেখে নেমে পড়েন মা দুর্গার কাঠামো বানাতে। তাঁর তৈরি প্রতিমা প্রশংসিত হয় জেলাজুড়ে। 
মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা সফিউল ওরফে বনু খান খুব বেশি প্রতিমা গড়েন না। কারণ, তাঁর সময়ের বড়ই অভাব। ৬২ বছরের এই প্রবীণ আপাদমস্তক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ২০১৯ সালের কান্দির বিধানসভার উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন সফিউল। বিধায়ক থাকাকালীনও তিনি দেবী দুর্গার মূর্তি বানিয়েছিলেন। এবার তিনি বিধায়ক নন। অর্কেস্ট্রা প্রোগ্রাম থেকে খেলার মাঠ, সমাজসেবা ও রাজনীতি সামলে বনুর হাতেই সৃষ্টি হচ্ছে মায়ের মৃন্ময়ী রূপ। গোটা শারদীয়ায় এবার একটিমাত্র প্রতিমা করছেন তিনি। একটি বারোয়ারি পুজোয় সেই প্রতিমা পূজিতা হবেন। তাতেই নাওয়া খাওয়া ভুলে এখন দিনরাত এক করে মাটির মূর্তিতে রূপদানের কাজ করছেন তিনি। 
শরতের আবহে কান্দির মুসলিম শিল্পীর হাতে মায়ের মৃন্ময়ী থেকে চিন্ময়ী হয়ে ওঠা। কাঠামো বানিয়ে মাটির প্রলেপ দেওয়া থেকে শুরু করে নিজের হাতেই প্রতিমা তৈরি করেন সফিউল আলম খাঁন। তারপর চক্ষুদান, প্রাণ প্রতিষ্ঠা,  সবটাই নিজে দেখাশোনা করেন তিনি। কান্দি থানার পাশে একটি ছোট স্টুডিও আছে তাঁর। দুর্গাপুজোর পাশাপশি সরস্বতী ও বিশ্বকর্মা পুজোর সময় তাঁর নাওয়া খাওয়া থাকে না। সারাবছর এই কাজের চাপ সামলানোর জন্য তিনজন যুবককে ট্রেনিং দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেখাচ্ছেন তিনি। সেই শিল্পীদের প্রতিমা তৈরির জন্য নিজেদের জমি জায়গাও দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারাও খুশি বনুর এই কাজে। মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরাও জানিয়েছেন, বনুর এই কাজে আমরা গর্বিত। এই বনুদা সঙ্গীত চর্চা থেকে শুরু করে মৃৎশিল্প, সবেতেই পারদর্শী। যেখানে ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িকতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে সেখানে বনুর হাতে তৈরি মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি জাতি, ধর্ম, বর্ণ সকলকে এক করে দেয় প্রতিবছর। বনু সাহেব বলেন, প্রতিবার প্রতিমা বানাই। মাটির প্রতিমায় তো প্রাণ থাকে না। প্রাণ থাকে আমাদের হৃদয়ে। হৃদয় দিয়ে এই কাজ করার চেষ্টা করি। যখন আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকে প্রতিমা তৈরির কাজে হাতেখড়ি। তারপর চলছে। গত কয়েকবছর নিয়মিত মা দুর্গার মূর্তি বানিয়েছি। এখন বয়স হয়েছে। তাই বেশি কাজ নিই না। একটি প্রতিমা খুব সুক্ষ্মভাবে করার চেষ্টা করি। বাবার কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। প্রতিমা বানানোর জন্য এই জায়গাটাও তিনিই দিয়েছেন।

সত্যিই সফিউল সাহেব আমাদের সেলামের যোগ্য। তার এই চিন্তা ধারা আমাদের সম্প্রীতিকে আরও শক্ত করবে।

যদি আপনার এই খবর ভাল লেগে থাকে তবে facebook এ অবশ্যই লাইক দেবেন ও অন্যকে শেয়ার করবেন।

উপসংহার –

ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত এইরকম আরও নানান খবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং উপরের ডানদিকের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে । যদি আপনার নিজস্ব কোন মতামত থাকে তবে আপনি নিচে কমেন্ট করবেন।

এইরকম আরও নানান নিত্যনতুন ব্যবসা-বাণিজ্য মূলক আইডিয়া পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং ডানদিকের উপরের টেলিগ্রাম আইকনে ক্লিক করে আজই জয়েন হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে

শেয়ার করুন -

Leave a Reply